নিউজ ডেস্ক (২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১), ঢাকা : করোনার সময়ে দেশে এসে আটকা পড়েছিলেন মালয়েশিয়ার এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের (এপিইউ) ছাত্রী তাজরিয়ান মোস্তফা মৌমিতা (২০)। শুক্রবার বিকেলে ওই বাসার নিচ থেকেই রক্তাক্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্বজনরা বলছেন, মৌমিতাকে সাততলার ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হতে পারে। তাদের অভিযোগের তীর বাড়ির মালিকের ছেলের দিকে। পুলিশ বলছে, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পর আদনান নামে এক তরুণকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই তরুণ বাড়ি মালিকের ছেলে ফাইজারের বন্ধু।
স্বজনরা জানিয়েছেন, তিন বোনের মধ্যে মেজ ছিলেন মৌমিতা। তিনি অনেকটা চাপা স্বভাবের হলেও সব সময় হাসিখুশি থাকতেন। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে মালয়েশিয়ায় পড়ালেখা করছিলেন। মেয়ের জন্য বাবা-মাও সেখানে বসবাস করতেন। গত বছরের ১৮ জুলাই ঢাকায় এসে আটকা পড়লেও বাসা থেকে অনলাইনে ক্লাস করছিলেন মৌমিতা।
মৌমিতার বাবার অভিযোগ- বাড়ির মালিকের একমাত্র ছেলে ফাইজার তার মেয়েকে বিভিন্ন সময়ে উত্ত্যক্ত করত। বাইরে থেকে নিজের বন্ধুদের নিয়ে ছাদে ও সিঁড়িতে মৌমিতাকে পেলেই উল্টাপাল্টা বলত। এ নিয়ে গত সপ্তাহে মৌমিতার মা ফাইজারের মায়ের কাছে অভিযোগও দিয়েছিলেন। এতে তিনি উল্টো প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, তার মেয়ে শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে ছাদে ওঠে। তিনি জানতে পেরেছেন, ওই সময়ে বাড়ি মালিকের ছেলে ফাইজার, তার বন্ধু আদদানসহ আরও কয়েকজন ছিল। তারা এক পর্যায়ে ছাদের দরজা আটকে দেয়। সন্ধ্যা ৬টার দিকে জানতে পারেন, মেয়ের নিথর দেহ নিচে পড়ে আছে। এটি পরিকল্পিত হত্যা।
মৌমিতার একজন স্বজন হুমায়ুন কবির বলেন, আশপাশের বাড়ির লোকজন দেখেছে শুক্রবার বিকেলে বাড়ি মালিকের ছেলেসহ অনেকেই ছাদে ছিল। সেখানে তারা মৌমিতার সঙ্গে উল্টাপাল্টা আচরণও করেছে। হয়তো তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে অথবা নিজেকে রক্ষা করতেই মৌমিতা ছাদ থেকে পালাতে চেয়েছিল। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চান।
অপর একজন স্বজন জানিয়েছেন, পুলিশ বাড়িওয়ালার ছেলের বন্ধুকে আটক করেছে। কিন্তু বাড়ির মালিকের ছেলেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই সবকিছু পাওয়া যাবে। কিন্তু পুলিশ সেদিকে যাচ্ছে না।
কলাবাগান থানার ওসি পরিতোষ চন্দ বলেন, মৌমিতার পরিবার শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তবে পুলিশ ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে। এরই মধ্যে এক তরুণকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ তদন্ত শেষ হলে এবং ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরই জানা যাবে।